মাধবপুর (হবিগঞ্জ) ১ মে : খরা ও তীব্র তাপদাহের কারণে উপজেলার ৫টি চা বাগানের চা পাতা পুড়ে যাচ্ছে। নানা রোগ বালাইও দেখা দিয়েছে ব্যাপক হারে। বৃষ্টি না হওয়া ও তীব্র গরমে চা পাতা উৎপাদনের ভরা মৌসুমে চা বাগানের নতুন কুঁড়ি না আসায় উৎপাদনের লক্ষামাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
প্রচন্ড গরমে চা গাছে আসছে না নতুন কুঁড়ি। তীব্র তাপমাত্রায় পুড়ে যাচ্ছে চা গাছ, দেখা দিয়েছে পোকা মাকড়ের উপদ্রব। এ মৌসুমে এখন দু-হাত ভরে চা পাতা তুলে আনার সময়, সেখানে শ্রমিকরা বাগান নির্ধারিত পাতাই তুলতে পারছেন না। এ অবস্থা থেকে চা বাগানকে রক্ষা করতে শ্রমিক, বাগান কর্তৃপক্ষ প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। কোথাও দেখা যায়, রেড স্পাইডারের আক্রমণে গাছে ধরেছে ‘লাল রোগ’। আবার কোথাও গাছের পাতা মরে ঝরে যাচ্ছে। বিভিন্ন চা বাগানে দেখা যায়, সেকশনে সেড টি বা ছায়া বৃক্ষ কম; সেসব সেকশনে গাছের পাতায় ধরেছে ভাঁজ। যাকে চায়ের ‘বাঞ্জি দশা’ বলা হয়।
বৃষ্টিপাতের জন্য অপেক্ষা না করে চা বাগানে কৃত্রিম উপায়ে সেচ দেওয়া হলেও রোগ বালাই থেকে রক্ষা করা যাচ্ছেনা চা গাছ।
ন্যাশনাল টি কোম্পানির তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক দীপেন কুমার সিংহ জানান, কয়েক সপ্তাহ ধরে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি, যা চা গাছের সহ্য সীমার থেকে অনেক বেশি। প্রচন্ড তাপে কুড়ি ফোঁটার আগেই চা গাছের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে।
আরেকটি সমস্যা হচ্ছে গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় বাগানে লাল মাকড়সা ছড়িয়ে পড়ছে। কীটপতঙ্গ চা পাতার রস খায়। এতে পাতাগুলো মরে যাওয়ার আগে শুকিয়ে যেতে শুরু থেকে। চলমান খরায় অনেক গাছ মরে যাচ্ছে। দীর্ঘকাল এমন অবস্থা চলতে থাকলে চা শিল্প ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়বে। তিনি আরও বলেন, গত বছর এ সময়ে ৭০ শতাংশ চা গাছে কচি পাতা এসেছিল। এ বছর এর পরিমান অর্ধেকেরও কম। এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম, চা
বাগানের ব্যবস্থাপক বাবুল সরকার বলেন, চা শিল্প বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। দীর্ঘ দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়া ও তীব্র গরমে চা বাগান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নানা রোগ বালাই দেখা দিয়েছে। কোথাও দেখা যায়, রেড স্পাইডারের আক্রমণে গাছে ধরেছে ‘লাল রোগ’। আবার কোথাও গাছের পাতা মরে ঝরে যাচ্ছে। এক কঠিন পরিস্থিতি চাগানের। অনেক এলাকায় কৃত্রিম উপায়ে সেচ দেওয়া হলেও রোগ বালাই থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না।
উপজেলার জগদিশপুর ,নোয়াপাড়া, বৈকন্ঠপুর চা বাগানেও একই অবস্থা। বৃষ্টির জন্য উন্মুখ হয়ে আছে চা বাগান। বৃষ্টি হলে কিছু ধাক্কা সামলালেও চা উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অর্জনের সম্ভবনা নেই এমনটাই জানালেন সংশ্লিষ্টরা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan